বগুড়ার ৩ উপজেলায় ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দি

- আপডেট সময় : ০৩:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / 64

বগুড়ার ৩ উপজেলার ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উঁচু স্থানে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে বন্যা ও ভাঙ্গন পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ভাঙ্গনে কামালপুরের ইছামারা ফকিরপাড়া, টিটুর মোড়ের পর হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া স্পার -২,গোড়ার অংশ বা স্যাংকে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ স্পার গতকাল গভীর রাতে প্রায় ১৫ মিটার অংশ ভেঙ্গে গেছে। এতে স্থানীয় লোকজন মধ্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা ও পাহাড়ী ঢলে ভাড়ী বৃষ্টির কারণে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। গতকাল যমুনা নদীতে ২২ সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর, ইছামারা, ফকিরাপাড়া ব্যাপক ভাঙনে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদীকুলীয় মানুষজন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে স্থান নিতে দেখা গেছে। এদিকে হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া গ্রামে ১৫ মিটার স্যাংক গোড়ার অংশে ভেঙ্গে যায়। সেখানকার লোকজনের মধ্যে নদীভাঙন আতঙ্কিত বিরাজ করছে। বাঁধ সংলগ্ন বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। নদীকুলীয় মানুষজনের জীবনযাত্রায় ব্যহত হচ্ছে। এদিকে নদীকুলীয় এলাকায় ১৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ইতিমধ্যে বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। অপরদিকে চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের ভাঙ্গরগাছা, হাটবাড়ি, সুজালীপাড়া, শিমুলতাইড়, কাজলা, কুড়িপাড়া, পাকুরিয়া, বেড়া পাঁচবাড়িয়া গ্রামের ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ওই ইউনিয়নের লোকজন তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন বাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্রে বসবাস করছে। এছাড়াও বোহাইল ইউনিয়নের লক্ষীকোলা, মাঝবাড়ি, কেষ্টিয়ারচর,কর্নিবাড়ী ইউনিয়নের মূলবাড়ী, তালতলা, মিলনেরপাড়া এলাকায় পানি প্রবেশ করে লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়ার সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় চর এলাকার
বাসিন্দাদের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
এ ব্যাপারে নদীকুলীয় এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মুহুর্তের
মধ্যেই যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা বাড়িঘর কোন রকমে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে। আবার কিছু কিছু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিভিন্ন আসবাবপত্র, গরু-ছাগল, হাস-মুরগী কিছু কিছু বের করতে পারলেও আবার অনেক স্থানে তাদের গরু,ছাগল, হাঁস মুরগী নদীতে
ভেসে গেছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় তারা বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারছে। গবাদী পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রীর না পাওয়ায় তাদের পরিবারের লোকজন অনাহারে দিনাতিপাত করছে।
এ ব্যাপারে কর্নিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ত্রাণ সামগ্রী অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, মূলত নদীর গতিপথ পরির্তনের ফলে পশ্চিম তীরে লোকায়ের দিকে পানির চাপ বেড়েছে। নদীর মাঝে চর জেগে গতিপথ পরিবর্তনের কারণেই তীরবর্তী এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।